চট্টগ্রামে উগ্রবাদী ইসকন সদস্যদের হাতে শহীদ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের নামাজে জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। বুধবার সকালে আদালত চত্বরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ ও প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা শরিক হন। দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে। সেখান থেকে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে আলিফের গ্রামের বাড়ি লোহাগাড়া থানার চুনতিতে।
এদিকে আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে নগরীর লালদিঘীর পাড় এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) খুন হন করা হয় । এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি বুধবার আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সাইফুল আদালত ভবন থেকে নামার পর চিন্ময়ের অনুসারীরা তাকে টেনেহিঁচড়ে বান্ডেল রোডে রঙ্গম সিনেমাহলের সামনে নিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘আইনজীবী খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে ৩০ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। যাচাই-বাছাই শেষে সবার নাম বলা যাবে। মঙ্গলবারের ঘটনায় দুটি মামলা হবে। মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। এরমধ্যে একটি আইনজীবীকে হত্যা ও আরেকটা পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলা।’ এর আগে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা।
এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন।