সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান হলো বিদ্রোহীদের হাতে। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর আলেপ্পো দখল করে প্রথমে চমক দেখায় বিদ্রোহীরা। এরপর একের পর এক শহর দখল করে রাজধানী দামেস্কও দখলে নিল তারা। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের একটি ঐতিহাসিক পরিণতি হলো।
সিরিয়াজুড়ে বিজয় উদযাপনের ঢল নেমেছে। বাস্তুচ্যুত সিরিয়ানরা তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এরমধ্যে অনেকে বাড়ি ফিরতে শুরুও করেছে।
স্বাভাবিকভাবেই এ পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ব নেতারা-
জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত গিয়ের পেডারসেন বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা। এই প্রক্রিয়াটি সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করবে এবং সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে। এটি একটি নতুন যুগের সূচনা হওয়া উচিত।
হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার দল সিরিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এক্ষেত্রে তারা আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানানো হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি এক্স বার্তায় বলেন, আসাদ চলে গেছেন। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আসাদের রক্ষাকারী রাশিয়াও তাকে ক্ষমতায় রাখতে এগিয়ে আসেনি। রাশিয়া ও ইরান এখন দুর্বল রাষ্ট্র।
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনার পর বাশার আল-আসাদ প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এই ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় রাশিয়া অংশগ্রহণ করেনি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেইজিং সিরিয়ার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং দেশটিতে দ্রুত স্থিতিশীলতা প্রত্যাশা করছে। একই সঙ্গে দেশটি সিরিয়ায় চীনা নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
ইসরাইলের প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেছেন, সিরিয়ার অধিকাংশ অংশ এখন আল-কায়েদা এবং আইএসআইএস সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করছি এবং গোলান মালভূমিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করছি।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, এই পরিবর্তন রাতারাতি হয়নি। গত ১৩ বছর ধরে সিরিয়া সংকটে ছিল। আমরা এই পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা আনার জন্য কাজ করব।
বিদ্যমান সংকট উত্তরণের জন্যও বিশ্ব নেতারা সংকট মোকাবিলার আহ্বান জানান। তারা সতর্ক করেছে অস্থিতিশীলতা যেন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর জন্য সুযোগ না হয়ে ওঠে। ফিলিপাইন সরকার সিরিয়ায় থাকা তাদের নাগরিকদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।