চট্টগ্রাম বন্দরে কয়েক দিনে ভোজ্যতেলবাহী চারটি জাহাজ নোঙর করার কারণে পাইকারিতে দরপতন হয়েছে পাম অয়েলের। সরবরাহ চাপ বেড়ে যাওয়ায় মূলত দাম কমেছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া দীর্ঘদিন পর দেশে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় করেছেন মিল মালিকরা।
কয়েকটি সূত্র থেকে জানা যায়, গত শনিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে চার জাহাজে আমদানি হয়েছে মোট ৫২ হাজার ১০০ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এর মধ্যে চট্টগ্রামভিত্তিক টিকে গ্রুপ ২৫ হাজার টন, ঢাকার সিটি গ্রুপ ২০ হাজার ও মেঘনা গ্রুপ প্রায় সাত হাজার টন সয়াবিন তেল আমদানি করেছে এসব জাহাজে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববাজারে সয়াবিনসহ পাম অয়েলের দাম একের পর এক বাড়লেও সরকারিভাবে দাম সমন্বয় না করায় আমদানিও কমে যায়। তবে সরকারের শুল্ক কর সংশোধন ও দাম সমন্বয়ের আশ্বাসে মিল মালিকরা সয়াবিন তেল আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছিলেন, সেগুলোই কয়েকদিনে জাহাজে করে এসেছে। আমদানি হওয়া এসব ভোজ্যতেল দিয়ে দেশের প্রায় এক মাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গত সোমবার বৈঠকের পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ও খোলা পাম অয়েলের দাম ৮ টাকা হারে বাড়ানো হয়। এর পরই বাজারে সরবরাহ বেড়ে যায়। এর ফলে গতকাল পাইকারিতে পাম অয়েলের দাম কমেছে মণে (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) প্রায় ১০০ টাকা। অন্যদিকে সয়াবিন তেলের দাম মণপ্রতি ৪০-৫০ টাকা কমে পাইকারিতে লেনদেন হচ্ছে।
সূত্র বলছে, সোমবার প্রতি মণ পাম অয়েলের লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ২০০ টাকায়। গতকাল তা কমে ৬ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। অন্যদিকে প্রায় ১০ দিন ধরে মণপ্রতি সয়াবিন তেল ৬ হাজার ৫০০ টাকায় লেনদেন হলেও ৫০ টাকা কমে গতকাল বিক্রি হয় ৬ হাজার ৪৫০ টাকায়। ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীসহ মিল পর্যায়ে ভোজ্যতেল বিক্রি বাড়িয়ে দেয়ায় বাজারে দাম কমছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। আবার দাম বাড়ানোর পাশাপাশি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দিয়ে ভোজ্যতেল বিপণন, মজুদ ও সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হলে সরকারের যে কঠোর হুঁশিয়ারি, সে কারণেও বাজারে দাম কমতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে যে দামে পাম অয়েল লেনদেন হচ্ছে সেটি সরকার ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক কম। নতুন দাম নির্ধারণের পর মিল মালিকরা নতুন করে এসও (সরবরাহ আদেশ) বিক্রির কারণে পাইকারি পর্যায়ে দরপতন শুরু হয়েছে।