অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ মারা গেছেন।
শুক্রবার বেলা ৩টায় রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. আবেদ চৌধুরী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উপদেষ্টা হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফ গণমাধ্যমকে জানান, তার বাবা উপদেষ্টা হাসান আরিফ হঠাৎ করে মেঝেতে পড়ে যায়। এরপরে তাকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এফ হাসান আরিফের বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শুক্রবার বাদ এশা ধানমন্ডি ৭ নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। শনিবার বেলা ১১টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রপ্রধান আজ এক শোকবার্তায় বলেন, উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। রাষ্ট্রপতি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা এক শোক বার্তায় বলেন, ‘তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি একজন দক্ষ আইনজীবী এবং আইনি তৎপরতা, ভিন্নমতাবলম্বী, ভিন্নমতের কণ্ঠস্বর। আমাদের সমাজের প্রান্তিক জনগণের মানবাধিকার রক্ষার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান প্রয়াত উপদেষ্টাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দর থেকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে ছুটে যান।
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সরকারের অন্য উপদেষ্টারাসহ, বিভিন্ন রাজনীতিক, সমাজকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শোক প্রকাশ করেছেন।
গত ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছিলেন হাসান আরিফ। পরে তাকে ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
হাসান আরিফ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে আইন পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ এফ হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।