যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে থেমে থাকা পাতাল ট্রেনে ঘুমন্ত নারীযাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় পুলিশ ইতিমধ্যে একজনকে আটক করেছে। তবে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। স্থানীয় সময় রোববার ২২ (ডিসেম্বর) সকালে নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের কনি আইল্যান্ড-স্টিলওয়েল অ্যাভিনিউ সাবওয়ে স্টেশনে একটি পাতাল (সাবওয়ে) ট্রেনে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এই ঘটনাকে ‘মানুষের বিরুদ্ধে সম্ভবত সবচেয়ে অমানবিক অপরাধের একটি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) জানায়, ওই নারী থেমে থাকা ‘এফ’ ট্রেনের ভেতরে সকাল ৭:৩০ মিনিটে নিথর অবস্থায় বসে ছিলেন। এই সময় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার কাছে এসে একটি লাইটার দিয়ে তার পোশাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, আক্রমণের আগে তাদের মধ্যে কোনো কথোপকথন হয়নি এবং তারা পরস্পরকে চিনতেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে নিউ ইয়র্ক পুলিশের কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ট্রেন থেকে নেমে যায়, আর স্টেশনে টহলরত পুলিশ কর্মকর্তারা আগুনের দিকে দৌড়ে যান। পুলিশ কর্মকর্তারা ট্রেনের ভেতর একজন ব্যক্তিকে পুরোপুরি আগুনে জ্বলতে দেখেন। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে পুলিশ আগুন নেভায়। জরুরি বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখনো ভুক্তভোগীর পরিচয় এবং আক্রমণের কারণ তদন্ত করছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের গায়ে লাগানো ক্যামেরা থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্পষ্ট ও বিস্তারিত ছবি পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি) সন্দেহভাজনের ছবি ছড়িয়ে দেয়।
এরপর কয়েকজন স্কুলপড়ুয়া কিশোর পরে ৯১১-এ ফোন করে অভিযুক্তকে অন্য একটি পাতাল ট্রেনে শনাক্ত করার কথা জানায়। পরে অভিযুক্তকে হারাল্ড স্কয়ার স্টেশনে আটক করা হয়।
কমিশনার টিশ বলেন, ‘আমি ওই কিশোর-কিশোরীদের ধন্যবাদ জানাই, যারা ৯১১-এ কল করেছে। তারা কিছু দেখেছে, কিছু বলেছে ও পদক্ষেপ নিয়েছে।’
নিউ ইয়র্ক সিটির সাবওয়েতে প্রতিদিন প্রায় ৪ মিলিয়ন যাত্রী চলাচল করে, যেখানে সহিংস অপরাধ তুলনামূলকভাবে বিরল। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সাবওয়েতে ৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২০২৩ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ৫।