রবিবার

,

৫ই জানুয়ারি, ২০২৫

৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

করসংক্রান্ত আইনে কিছু সংশোধনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও অনিয়ন্ত্রিত হোটেল সেবাসহ আরো কিছু ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কয়েকটি পণ্যের ভ্যাট বৃদ্ধিসহ কিছু ক্ষেত্রে নতুন করে ভ্যাট আরোপেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের বাজারে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘কয়েকটি ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়লেও জিনিসপত্রের দামের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না।’

বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির মূল প্রভাবক উপাদান হলো চাল, ডাল ইত্যাদির মতো পণ্য। আমরা যেসব জিনিসের দাম বাড়াচ্ছি, সেগুলো মূল্যস্ফীতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে খুব কমই গুরুত্বপূর্ণ।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘ভাতের রেস্টুরেন্ট বা অন্যান্য রেস্টুরেন্টের ভ্যাট বাড়ানো হয়নি। বিমানের ভাড়ার ক্ষেত্রে আগে ভ্যাট ছিল ৫০০ টাকা। সেটি ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। মনে হয় অভ্যন্তরীণ রুটের বিমানগুলোয় যারা চড়েন, তারা এ টাকা দিতে পারবেন।’

এসি রেস্টুরেন্টে খাবারের বিলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগে এ সেবায় করহার ছিল ৫ শতাংশ। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, পোশাক, মিষ্টি, বিস্কুট, আচার, ম্যাট্রেস, ট্রান্সফরমার, টিস্যু পেপারসহ আরো বেশ কয়েকটি পণ্য ও সেবার ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ড্রাইভিং লাইসেন্স বানানোর ভ্যাটও বাড়ছে।

এ ছাড়া মদের বিলের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ২০ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

দেশে করহার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশেই এমনকি নেপাল, ভুটানেও এত লো ট্যাক্স নেই। আমরা সবসময় বলেছি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ক্ষেত্রে আমরা এটি শূন্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’

করহার বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কয়েক হাজার কোটি টাকা কর ছাড় দেয়া হয়েছে। আমাদের রাজস্ব ঘাটতি বেশি, বড় ঘাটতিতে অর্থায়ন করে অগ্রসর হতে পারব না।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি খাতে আমরা বরাদ্দ বাড়াব। কিন্তু এজন্য আমাদের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। ধার করে বেশি দিন চলা যায় না। সব দিক চিন্তাভাবনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

তবে ভ্যাট বাড়ানোর বিষয়টি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশ চালাতে তো রাজস্ব লাগবে। তার উদ্যোগ হিসেবেই এমন সিদ্ধান্ত। বিষয়টি চূড়ান্ত হলে অধ্যাদেশ জারি হবে, তখন বিস্তারিত বলা যাবে।’