রবিবার

,

৫ই জানুয়ারি, ২০২৫

সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা গণতান্ত্রিক যুদ্ধে ছিলাম, সেই যুদ্ধ শেষ হয়েছে। চলুন এবার একসাথে উঠে দাঁড়াই, সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার পথ নির্দেশনা তৈরি করি।

শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুর সরকারি কলেজের মাঠে অর্থনীতি বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমরা এখন স্বপ্ন দেখছি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরা যে স্বপ্ন দেখিয়েছে। দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। এজন্য আপনারা দেশবাসী সকলেই সহযোগিতা করবেন, এই প্রত্যাশা আমি ব্যক্ত করছি।

তিনি বলেন, আমাদের মাঝে দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি ভালবাসা থাকলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সমস্যা থাকবে, সেই সমস্যা নিয়েই আমাদেরকের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সব আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে ২৮০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে। তারা ভয় ও গুমের রাজত্ব তৈরি করেছিল।

বিগত ১৫ বছরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। লক্ষ লক্ষ বিএনপির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে, হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে অহেতুক গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে। বছরের পর বছর রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তারা বিনা দোষে জেল খেটেছে।

তিনি বলেন, অমিত সম্ভাবনার এ দেশটিকে নিয়ে যেখানে আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেখানে আমরা বারবার হোচঁট খেয়েছি। যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, তা বাস্তবায়িত করতে পারিনি।

আমরা এখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। বিগত ৫২-৫৩ বছরে বাংলাদেশকে একটা সুখী সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নুতন বাংলাদেশ বির্নিমাণে তাদের চিন্তা চেতনা নিয়ে কথা বলছে। দেশ প্রেম নিয়ে আগামীতে তারা সঠিক পথ দেখাতে পারে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সবাই গণতন্ত্রের কথা বলি, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করি না। নেতিবাচক চিন্তা করলে হবে না। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি বরং দিনের পর দিন এখানে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেওয়া হয়নি। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে বিরোধে লিপ্ত হয়েছি। সহনশীলতার মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র চর্চা করে এগিয়ে যেতে পারলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কি করুণ সময় গেছে এ জাতির, এদেশের মানুষের। আমরা ভোট দিতে পারিনি। বিগত ১৫ বছরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানে না ভোট কি, তারা ভোট দিতে পারেনি। পর পর ৩টি টার্ম ভোটের জয়লাভ করার নামে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেছে। দেশের মধ্যে ভীতি তৈরি করে মানুষকে নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছে।

তারা লুট করে নিয়ে গেছে দেশের সম্পদ। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টরা ২৮০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।

উল্লেখ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত দিনাজপুর সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি খেলাধূলা,সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। অনুষ্ঠানে সাবেক সহকর্মী, সাবেক ছাত্র ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।