মঙ্গলবার

,

৭ই জানুয়ারি, ২০২৫

তীব্র শীতে দুর্ভোগে দেশবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। পাশাপাশি সারাদেশে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে দেখা যাচ্ছে। তবে রাজধানীতে শীতের তীব্রতা কিছুটা কম। সারাদেশের ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় ব্যাহত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। যার ফলে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ তীব্র শীতে তেমন কাজ পাচ্ছে না। আয় কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের। এছাড়া শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।

দেশের বিভিন্ন স্থানে মৌসুমের প্রথম দফার তীব্র শীতে স্বাভাবিক যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মারাত্মক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি)’র প্রকাশিত জানুয়ারি মাসের মাসিক আউটলুক অনুসারে, ইদানিং ঘন কুয়াশার কারণে সমগ্র দেশে বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে দেরি করে সূর্যের দেখা মেলায় তাপমাত্রা তীব্রভাবে হ্রাস পাচ্ছে।

বিএমডি’র পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি জানুয়ারি মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক থেকে দুইটি মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

এ ছাড়া এ মাসেই দেশের অন্যত্র দুই থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

জেলা সংবাদদাতারা জানান, চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

ঘন কুয়াশার প্রভাব পড়েছে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায়। ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে যানবাহনের গতি কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, ঘন কুয়াশায় শুক্রবার রাত ১১টায় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কুয়াশা কিছুটা কমলে শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার পর আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়।

কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত পঞ্চগড়ের জনজীবন। ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

সাতক্ষীরায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা। বেড়েছে শিশু-বৃদ্ধদের দুর্ভোগ। সাতক্ষীরায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন।

তীব্র শীতে ব্যাহত নড়াইলের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। কাজে বের হয়ে বিপাকে দিনমজুর। উষ্ণতা পেতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই।

যশোরেও জেঁকে বসেছে শীত। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচন্ড ঠান্ডায় মৃত্যু হয়েছে ৩ শিশুর। বাড়তি সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসকদের।

কুষ্টিয়ায় কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে ব্যাহত কৃষিকাজ। জেলায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

তাপমাত্রা কমে যাওয়া চরম দুর্ভোগে কুড়িগ্রামের শ্রমজীবিরা। জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা।

একই রকমের চিত্র দেশের অন্যজেলাগুলোতেও। হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত মানুষ। মেঘলা আকাশে দেখা নেই সূর্যের। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করেই কর্মস্থলে ছুটছে খেটে খাওয়া মানুষ। বাড়ছে শীতজনিত রোগ।

তীব্র শীতে সমাজের হত দরিদ্র মানুষদের একটু উষ্ণতা দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।