দেশের বৈশ্বিক ব্র্যান্ডিং ও প্রভাব বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন । তিনি বলেন, ‘যখন এনআরবিরা তাদের বসবাসের দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হন, তখন তা বৈশ্বিক পর্যায়ে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে তোলে।’
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং বিষয়ক এক প্রবাসী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা বৈশ্বিকভাবে প্রভাবশালী হতে চাই, তাহলে এটাই আমাদের পথ।’
ভারতীয় প্রবাসীদের উদাহরণ দিয়ে তৌহিদ বলেন, “ভারতীয়রা বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাজনৈতিক সংস্থায়, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে, গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বৈশ্বিক প্রভাব অর্জন করেছেন।’
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ, যাদের শাখা বহু দেশে বিস্তৃত।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি কখনো কোনো দেশের মানুষকে বিদেশি বিমানবন্দরে কারও বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখেছেন?’
এ ধরনের কাজ দেশের ব্র্যান্ডিং ও ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি কখনো ভারতীয়দের এ ধরনের কাজ করতে দেখবেন না। কেন ভারতীয়রা বিদেশে বিভিন্ন সুবিধা পান, আর আমরা পাই না? কারণ আমরা স্থানীয় রাজনীতিতে কম সক্রিয়।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ব্র্যান্ডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এর পথ স্থানীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে।’
তৌহিদ আরও উল্লেখ করেন যে, ভারতীয়রা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রভাবশালী অবস্থান তৈরি করেছেন, যা বাংলাদেশি এনআরবিদেরও লক্ষ্য হওয়া উচিত।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার মোকাবিলায় বিশেষত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য খণ্ডন করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘কিছু ঘটনা ঘটেছে, তবে সেগুলো ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে ছিল না। উদাহরণস্বরূপ, যদি ১০টি বাড়ি আক্রমণ করা হয়, তার মধ্যে ৮টি মুসলমানদের।’
তিনি প্রবাসীদের প্রতি বাংলাদেশের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।
অভিবাসনের খরচ কমানো এবং ভাষার দক্ষতাসহ বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপরও জোর দেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের শ্রমশক্তিকে আরও দক্ষ করে তুলতে পারি, তাহলে রেমিট্যান্স দ্বিগুণ করতে পারব।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (এইচএসআইএ) যাত্রী হয়রানি বন্ধে তৎপরতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হয়রানির জন্য দায়ীদের বিচার করা হবে।’
তৌহিদ বাংলাদেশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করে বলেন, তাদের কাজ দেশের বৈশ্বিক ইমেজ উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের ইতিবাচক ইমেজ বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের শান্তিরক্ষীরা আফ্রিকায় একটি শক্তিশালী ইমেজ তৈরি করেছে। এগুলো ইতিবাচক ইমেজ। অন্যদিকে, যখন আমরা (অবৈধভাবে) ভূমধ্যসাগর পার হই, তখন আমাদের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’