মঙ্গলবার

,

১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫

বর্ণাঢ্য আয়োজনে নিউ ইয়র্কে পথচলা শুরু করলো এটিভি ইউএসএ

সৌরভ ইমাম, নিউ ইয়র্ক
ছবি: এটিভি ইউএসএ

বাংলা সংস্কৃতিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয়ে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে শুভযাত্রা শুরু করেছে বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল ‘এটিভি ইউএসএ। নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডের ‘রয়্যাল পাম’ পার্টি হলে বর্ণিল আয়োজনে নতুন এই চ্যানেলের উদ্বোধন করা হয়। বাংলা গান, ফ্যাশন শো, আর নৃত্যের ছন্দে একটি প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় উদ্বোধনের বর্ণাঢ্য রাতে।

 

 

আমেরিকার স্মরণকালের ইতিহাসে ভয়াবহ অগ্নিদুর্যোগে পুড়ছে ক্যালিফোর্নিয়া। কেবল সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নয়, মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। বিশ্ব সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র হলিউড সীমাহীন ক্ষতির মুখে। এমন দুর্যোগে ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষের পাশে দাঁড়াতে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর দোয়া করা হয়।

 

 

আমেরিকা এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় উপস্থিত সবাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এসময় দাঁড়িয়ে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত সবাই। এরপর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস (বিপা)-এর শিল্পীরা একটি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে এটিভির গত দুই বছরের পথচলা নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

 

 

দর্শকদের মুগ্ধতার মধ্যেই মঞ্চে আসেন এটিভি ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও আকাশ রহমান, চেয়ারপার্সন এশা রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এটিভি ইউএসএ’র স্টেশন হেড শামীম আল আমিন। শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক সাদাকালোর নির্বাহী সম্পাদক কাশেম মোহাম্মদ এবং আশা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার বোরহানুস সুলতান।

 

 

নিউ ইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের শুরুটা দেখলেই বোঝা যায় অনেক দূর যাবে। এটিভি ইউএসএ আমেরিকায় বাংলা ভাষার মানুষের প্রিয় চ্যানেলে পরিণত হবে বলে প্রত্যাশা তার। এটিভি ইউএসএ বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষার মানুষের মুখপাত্র হবে বলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললেন প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট ও সিইও আকাশ রহমান। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ের কথাই জানিয়েছেন তিনি। এ সময় পাশে থাকার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান চেয়ারপার্সন এশা রহমান।

 

 

পরে রিমোর্ট চেপে এটিভি ইউএসএ’র উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে নিউ ইয়র্ক স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ জেনিফার রাজকুমারের পক্ষ থেকে এটিভি ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও আকাশ রহমান ও চেয়ারপার্সন এশা রহমানকে সম্মানসূচক অ্যাওয়ার্ড প্রদান ও এটিভি ইউএসএ তে প্রোকলামেশন দেয়া হয়। আর স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টিভেন রাগার ভিডিও বার্তায় ছিলো শুভেচ্ছা।

ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ, দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর, কণ্ঠশিল্পী ও শিক্ষাবিদ ড. নিরুপনা রহমান, সংগঠক জেড এফ খানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা।

 

 

অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিলো এটিভি ইউএসএ’র থিম সং। ইশতিয়াক আহমেদের কথায় তানভীর তারেকের সুরে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন একঝাঁক তারকা শিল্পী। বাংলাদেশ থেকে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর ও কোনাল। নিউ ইয়র্ক থেকে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান বকুল, শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথি, মো. সৌরভ, শামীম সিদ্দিকী, চন্দ্রা রায়, মরিয়ম মারিয়া এবং নাজু আকন্দ। গানটি দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

এটিভি ইউএসএ সংবাদের পাশাপাশি নানা তথ্যভিত্তিক, বিনোদনমূলক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান প্রচার করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একাধিক প্রোমো প্রদর্শনের মাধ্যমে অতিথিদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে ধারনা দেয়া হয়। এই সময় বিভিন্ন টক শো এবং বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের প্রোমো দেখানো হয়।

 

 

এটিভির উদ্যোক্তা আকাশ রহমান এবং বিশিষ্ট রিয়েলটর মোহাম্মদ কবীরের নতুন উদ্যোগ কী ম্যাক্স রিয়েলটি নিয়ে তারা মঞ্চে হাজির হন। তাদের দুজনের প্রাঞ্জল উপস্থিতি সবাইকে মুগ্ধ করে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও ছিলো বর্ণিল। বিশেষ করে ফ্যাশন শো’তে বাংলাদেশ ও আমেরিকার খ্যাতিমান মডেলদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। খ্যাতিমান মডেল নিবিড় আদনান নাহিদ ও অন্যরা মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন। এতে ডিজাইনার ছিলেন মাজিদ লোদি এবং মেকাপ আর্টিস্ট ছিলে নিভেন সাফি।

 

বিপার শিল্পীদের মধ্যে নৃত্যে অংশ নেয় জারিন মাইশা, এলমা রুদমিলা, শ্রদ্ধা সাহা আলভিনা, জামিল রহমান, ফারিবা করিম, কাজী মুস্তা এবং অন্তু মজুমদার।

সবশেষ মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের কিংবদন্তী শিল্পী সামিনা চৌধুরী। তিনি তাঁর একাধিক জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন। অতিথিরাও তাঁর সাথে ঠোঁট মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।

 

 

অনুষ্ঠানটির প্রাণবন্ত সঞ্চালনা করেছেন শারমিনা সিরাজ সোনিয়া এবং সাদিয়া খন্দকার।