মঙ্গলবার

,

৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিন থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কর্মদিবসেই অবৈধ অভিবাসী আটক ও বিতাড়িত করার অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে আমেরিকার একাধিক গণমাধ্যম। ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এবং ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প মনোনীত ‘বর্ডার জার’ টম হোম্যান জানুয়ারির ২১ তারিখ সকাল থেকেই শিকাগোতে এই অভিযান শুরু করতে পারেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিকাগোর এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম এপিকে জানান, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার দায়িত্ব গ্রহণের পর ফেডারেল ইমিগ্রেশন অফিসাররা গুরুতর ও সহিংস অপরাধের ইতিহাস রয়েছে এমন ৩০০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবেন। ওই কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, সপ্তাহজুড়ে গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা রয়েছে। যা বৃহৎ পরিসরে বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি পূরণের দিকে তার প্রশাসনের প্রাথমিক প্রচেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত হবে।

শনিবার এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন যে গণ-বিতাড়ন এখনও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা শহর থেকে শুরু হবে তা জানাননি, তবে তিনি বলেছেন যে শীঘ্রই শুরু হবে।

এর আগে টাইম ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আমি আমাদের দেশে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

ট্রাম্প তার পুনর্নির্বাচনি প্রচারণায় অভিবাসীদের বিপজ্জনক অপরাধী হিসেবে চিত্রিত করেছেন এবং বৈধ-অবৈধ উভয় ধরনের অভিবাসন মোকাবিলায় ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে এই বিতাড়ন কার্যক্রমের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং ফেডারেল সরকারের সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছেন।

রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক উভয় প্রশাসনই এর আগে মেক্সিকো সীমান্তে সীমান্ত টহল সহায়তায় ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহার করেছে। তবে, অভিবাসীদের গ্রেফতারে তাদের ব্যবহার করা হয়নি। ট্রাম্প প্রশাসনও সেনাবাহিনীকে সমর্থক ভূমিকা পালনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন আসন্ন সীমান্ত বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত টম হোম্যান।

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হোম্যান বলেন, আমরা পরিবহন, অবকাঠামো নির্মাণ, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং লক্ষ্য নির্ধারণে প্রতিরক্ষা বিভাগকে সহায়ক ভূমিকা পালনের জন্য চাই। তবে গ্রেফতার করবেন শপথ নেওয়া অভিবাসন কর্মকর্তারা।

ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন অভিবাসীদের দ্রুত বিতাড়নের দিকে মনোযোগ দেবে, যাতে তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী শিবির স্থাপনের প্রয়োজন না হয়। তিনি বলেন, আমি চাই না তারা ২০ বছর ধরে শিবিরে বসে থাকুক। আমি চাই তারা দ্রুত বেরিয়ে যাক, আর দেশগুলো তাদের ফিরিয়ে নিক।

তিনি আরও বলেন, তার চার বছরের মেয়াদে সব অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

অভিবাসন সমর্থক আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের মতে, সব অবৈধ অভিবাসীকে অপসারণের ব্যয় এক দশকেরও বেশি সময়ে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার হবে।

ট্রাম্প ২০১৭-২০২১ সালে তার প্রথম মেয়াদে এই ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে সফল হতে পারেননি। তুলনামূলকভাবে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ২০২৩ সালে ট্রাম্পের যেকোনও বছরের চেয়ে বেশি অভিবাসী বিতাড়ন করেছে।