বুধবার

,

৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। সোমবার মধ্যরাতের পর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবারও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় অনেক যাত্রীকে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদের কেউই ট্রেন চলাচল বন্ধের খবর জানতেন না। এ ছাড়া রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, ঈশ্বরদী, সিরাজগঞ্জ, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। দীর্ঘ অপেক্ষা থেকে নিরুপায় হয়ে অনেকে বিকল্প পথে যাত্রা শুরু করেছেন।

যাত্রীরা জানান, স্টেশনে আসা কেউই জানতেন না ট্রেন চলাচল বন্ধ। তাই কাউন্টারে এসেই পড়তে হয় বিপাকে। শীতের মধ্যে ভােরে পরিবার নিয়ে আসা যাত্রীদের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। অপেক্ষার পালার সাথে ছিল খরচের প্রসঙ্গও। অনলাইনে টিকেট কেটে ফেরত নেবে কীভাবে, জানা ছিল না বেশিরবাগ যাত্রীর। সঙ্গে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় অনেকের বাড়ি ফিরতে হয়েছে অনেক কষ্টে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, তার মন্ত্রণালয় আন্দোলনরত কর্মীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। ট্রেন বন্ধ করে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে না ফেলার আহ্বান জানান তিনি।

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। গত বুধবার চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

রেলকর্মীদের কর্মবিরতির কারণে সারা দেশে ট্রেন চলাচলে অচলাবস্থা নিরসনে আন্দোলনরত রানিং স্টাফ নেতাদের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে কোনো সমাধান হয়নি। মঙ্গলবার ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর রানিং স্টাফ নেতারা বেরিয়ে এসে সমঝোতা না হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, তাঁদের আরো আলোচনা চলবে। একই সঙ্গে চলবে কর্মবিরতিও। এতে বুধবারও তাঁদের কর্মবিরতি থাকছে।

এ ছাড়া সারা দিনে আরো কয়েকটি বৈঠক হয়। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সমঝোতা হয়নি। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় রাজশাহী রেলস্টেশনে বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

এই রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনচালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। তারা সাধারণত দীর্ঘ সময় ট্রেনে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন তারা। এ ছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো।

তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।