আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগামী কয়েক মাসে পশ্চিম ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকা থেকে প্রায় এক ডজন কনস্যুলেট গুটিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির একাধিক কর্মকর্তা।
ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে মানবাধিকার, শরণার্থী, বৈশ্বিক ন্যায়বিচার, নারী সংক্রান্ত বিষয় ও চোরাচালান প্রতিরোধের মতো যেসব বিশেষজ্ঞ ব্যুরো আছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সেগুলোকেও একীভূত করার পরিকল্পনা করছে।
ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক সরকারি ব্যয় কমাতে আমেরিকার ফেডারেল কর্মীবহর ছোট করে আনার যে নজিরবিহীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তার অংশ হিসেবে বিশ্বজুড়ে আমেরিকার দূতাবাসগুলোকে নিজদেশীয় কর্মীর পাশাপাশি স্থানীয় কর্মীদেরও অন্তত ১০ শতাংশকে ছাঁটাই করার পরিকল্পনা হাতে নিতে বলা হয়েছে।
ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়টি এখন যেসব ছোট কনস্যুলেটগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে তার মধ্যে জার্মানির লাইপজিগ, হামবুর্গ, ডুসেলডর্ফ, ফ্রান্সের বরদো, রেন, লিওঁ ও স্ত্রাসবুর্গ এবং ইতালির ফ্লোরেন্স আছে বলে জানিয়েছেন তিন কর্মকর্তা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, কেন্দ্রীয় সরকারের আমলাতন্ত্র তার ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নেবে। ‘বিশ্বস্ত ও কার্যকরভাবে’ পররাষ্ট্রনীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুনর্গঠনে গত মাসে তিনি একটি নির্বাহী আদেশও জারি করেন।
তবে সমালোচকরা বলছেন, একদিকে বিশ্বজুড়ে শত শত কোটি ডলারের সাহায্য পৌঁছে দেওয়া ইউএসএআইডিকে কার্যত বন্ধ করে দেওয়া, আবার অন্যদিকে আমেরিকার কূটনীতিক বহর ছোট করে আনা; এই দুইয়ের কারণে বিশ্বজুড়ে আমেরিকার প্রভাব কমে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। বিপজ্জনক শূন্যতা সৃষ্টি হলে রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলো সেটার সুযোগ নিতে পারে।
আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে তাদের কূটনৈতিক মিশনের সংখ্যা ২৭০টির বেশি, মোট কর্মীর সংখ্যা ৭০ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে প্রায় ৪৫ হাজারই স্থানীয় দেশগুলো থেকে নিয়োগ পাওয়া।