বৃহস্পতিবার

,

১০ই এপ্রিল, ২০২৫

উত্তর কোরিয়া রাশিয়ায় আরো ৩ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে : সিউল

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়া এ বছর রাশিয়ায় আরও ৩ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে এবং কিয়েভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মস্কোকে সাহায্য করার জন্য এখনও ক্ষেপণাস্ত্র, কামান এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। বৃহস্পতিবার সিউলের সামরিক বাহিনী একথা জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া এই বছর ইউক্রেনে মস্কোর যুদ্ধের জন্য রাশিয়ায় আরও ৩ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

২০২২ সালে ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণের পর থেকে রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে। সিউল নেতা কিম জং উনকে মস্কোকে সাহায্য করার জন্য হাজার হাজার সৈন্য এবং অস্ত্রের কন্টেইনার পাঠানোর অভিযোগ করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ‘ইয়োনহাপ’ এই খবর জানিয়েছে।

এদিকে মস্কো বা পিয়ংইয়ং কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যখন উত্তর কোরিয়ায় বিরল সফর করেছিলেন, তখন উভয় দেশ একটি বিশাল সামরিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। যার মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কথাও ছিল। উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ‘কেসিএনএ’ এই খবর জানায।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ বলেছেন, ‘জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অতিরিক্ত ৩ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে’। ইয়োনহাপের খবরে একথা বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় পাঠানো প্রাথমিক ১১ হাজার উত্তর কোরিয়ার সৈন্যের মধ্যে ৪ হাজার নিহত বা আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জেসিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জনবলের পাশাপাশি, উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র, কামান সরঞ্জাম এবং গোলাবারুদ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে’ ।

এতে বলা হয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত এটি মূল্যায়ন করা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, পাশাপাশি প্রায় ২২০ ইউনিট ১৭০ মিমি স্বয়ংক্রিয় বন্দুক এবং ২৪০ মিমি মাল্টিপল রকেট লঞ্চার সরবরাহ করেছে’ ।

এটি সতর্ক করে দিয়েছিল, ‘যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এই সংখ্যাগুলো আরো বাড়তে পারে’।

গত বছর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, পারমাণবিক অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ায় রপ্তানির জন্য অস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে।

বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যে কিম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সম্বলিত নতুন আত্মঘাতী এবং গোয়েন্দা ড্রোনের পরীক্ষা তদারকি করেছেন।

কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, নতুন কৌশলগত গোয়েন্দা ড্রোনটি ‘স্থল ও সমুদ্রে বিভিন্ন কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু এবং শত্রু সৈন্যদের কার্যকলাপ ট্র্যাক এবং পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম’।

কেসিএনএ অনুসারে, আত্মঘাতী ড্রোনগুলো ‘বিভিন্ন কৌশলগত আক্রমণ মিশনের জন্য ব্যবহারের জন্য’ আক্রমণাত্মক ক্ষমতাও প্রদর্শন করেছে।

কিম ‘নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রবর্তনের মাধ্যমে কৌশলগত গোয়েন্দা ড্রোন এবং আত্মঘাতী হামলার ড্রোন’-এর উন্নত কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করেছেন।

কেসিএনএ জানিয়েছে, তিনি ‘উৎপাদন ক্ষমতা সম্প্রসারণের’ একটি পরিকল্পনায়ও সম্মত হয়েছেন।

গত আগস্টে পিয়ংইয়ং তাদের আক্রমণাত্মক ড্রোন উন্মোচন করে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই অঞ্চলে নতুন সক্ষমতা রাশিয়ার সাথে উত্তর কোরিয়ার উদীয়মান জোটের জন্য দায়ী হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আরো সতর্ক করেছেন, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে প্রেরিত উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা আধুনিক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, যার মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন কীভাবে ব্যবহার করা হয় তাও অন্তর্ভুক্ত।

উত্তর কোরিয়ান স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইয়াং মু-জিন এএফপি’কে বলেন, উত্তর কোরিয়া এখন ‘ড্রোনের মতো মানবহীন অস্ত্র ব্যবস্থার ওপর মনোযোগ দিচ্ছে, কারণ এটি মূলত তাদের পাঁচ বছরের প্রতিরক্ষা উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ’।