রবিবার

,

১৩ই এপ্রিল, ২০২৫

লাখো মানুষের অংশগ্রহণে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকার লাখো মানুষ।

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নেয় ঢাকা ও আশপাশের এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়া বাংলাদেশের অনেক জেলা থেকেও প্রতিবাদ জানাতে আসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এবং ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

দুপুর ৩টায় কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। গাজাবাসীর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির দিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আব্দুল মালেক।

এদিন ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-বড় নানা বয়সি মানুষকে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একত্রিত হতে দেখা যায়। নানা সামাজিক সংগঠন ও দলের মানুষ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ফিলিস্তিনের জন্য সমবেদনা অনুভব করে এক মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও শিল্পী, কবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় ব্যক্তিরাও যোগ দিয়েছেন কর্মসূচিতে। দল-মত নির্বিশেষে এক কাতারে সকলে এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান।

ঘোষণাপত্রে মুসলিম বিশ্বের সরকার ও ওআইসি’র মতো মুসলিম উম্মাহর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোর প্রতি ৫ দফা দাবির কথা উল্লেখ করা হয়। দাবিগুলো হলো ইজরাইলের সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক সকল সম্পর্ক অবিলম্বে ছিন্ন করতে হবে, জায়নবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে, গাজার মজলুম জনগণের পাশে চিকিৎসা, খাদ্য, আবাসন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা-সহ সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়াতে হবে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইজরাইলকে এক ঘরে করতে সক্রিয় কূটনৈতিক অভিযান শুরু করতে হবে এবং জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসনের অধীনে মুসলিমদের অধিকার হরণ, বিশেষ করে ওয়াক্ফ আইনে হস্তক্ষেপের মতো রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ওআইসি ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দৃঢ় প্রতিবাদ ও কার্যকর কূটনৈতিক অবস্থান নিতে হবে।

ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি ৬টি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল এবং ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে, ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে, গাজায় রাষ্ট্রীয়ভাবে ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠাতে হবে, জায়নবাদী কোম্পানির পণ্য বর্জনে সরকারি নির্দেশনা দিতে হবে, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং পাঠ্যবই ও নীতিতে আল-আকসা ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামী ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেকের মোনাজাতের মাধ্যমে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।