বৃহস্পতিবার

,

২৪শে এপ্রিল, ২০২৫

রোমে আমেরিকা-ইরান পরমাণু আলোচনা ‘গঠনমূলক’ পরিবেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে আবার বৈঠক করেছে ওয়াশিংটন ও তেহরান। শনিবার ইতালির রাজধানী রোমে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু হয়ে প্রায় চার ঘন্টা পর শেষ হয়েছে। আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বৈঠকে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। রোম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

দ্বিতীয় দফার বৈঠকে ‘গঠনমূলক’ পরিবেশ ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে।

গণমাধ্যমটি জানায়, ওমানের রাজধানী মাসকাটে প্রথম দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক সপ্তাহ পর ইরান ও আমেরিকার প্রতিনিধিদলের মধ্যস্থতায় আলোচনা ইতালির রাজধানীতে ওমান দূতাবাসে স্থানীয় সময় সাড়ে ৯টায় শুরু হয়।

ওমান সরকার জানিয়েছে, ২৬ এপ্রিল তৃতীয় দফায় আবার মাসকাটে বসতে পারেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকেরি বলেছেন, আগামী কয়েক দিন ‘পরোক্ষভাবে’ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই পক্ষ।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ও আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ যে আলোচনা এগিয়ে নিতে রাজি, তা নিশ্চিত করেছে ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমেরিকা–ইরান আলোচনা গতি পাচ্ছে এবং যেটা হওয়ার কথা নয়, সেটাও এখন সম্ভব।

বৈঠক যে ভালো হয়েছে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন আব্বাস আরাগচিও। তিনি বলেছেন, বৈঠক থেকে অগ্রগতি পাওয়া গেছে। এবারের বৈঠকে বিভিন্ন নীতি ও লক্ষ্যের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আরও ভালো বোঝাপড়া হয়েছে।

তবে ইরান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, চলমান আলোচনা কেবল তাদের পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

আরাগচি আরো বলেন, ‘আমেরিকা যদি অযৌক্তিক ও অবাস্তব দাবি না তোলে, তাহলে একটি চুক্তি সম্ভব।’

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতি তাদের সমর্থন প্রসঙ্গেও আলোচনা করতে চায় ওয়াশিংটন। তবে তেহরান তা চাইছে না।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তিতে অংশ নিয়েছিল আমেরিকা। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ কার্যক্রম সীমিত করবে। বিনিময়ে দেশটির ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। পরে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসে আবারও ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগে তৎপরতা শুরু করেন ট্রাম্প। তবে গত মার্চে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে লেখা একটি চিঠিতে নতুন করে পরমাণু আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান তিনি। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বিফলে গেলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।