শুক্রবার

,

১৪ই মার্চ, ২০২৫

ধর্ষনের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যু, জড়িতদের বিচার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া বৃহস্পতিবার মারা গেছে। দেশের অগণিত মানুষকে কাঁদিয়ে সে চলে গেছে না-ফেরার দেশে। দুপুর ১টায় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে।

এ ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

আছিয়ার মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ জনতা মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের বাড়িতে রাত ৮টার দিকে ভাঙচুর শুরু করে আগুন দিয়েছে।

এদিকে ঢাকায় নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করছে ছাত্র-জনতা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। পরে মিছিলটি নীলক্ষেত মোড় ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে বিজয় একাত্তর হল ঘুরে আবার রাজু ভাস্কর্য হয়ে শহীদ মিনারের দিকে মিছিলটি গিয়ে যায়।

সূত্র জানায়, হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) চিকিৎসা চলছিল শিশুটির। এরআগে বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দু‘বার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির।

আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরো অবনতি হলে শনিবার বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল।

সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৭টায় মাগুরার নোমানী ময়দানে শিশুটির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তার লাশ বাড়ির কাছে শ্রীপুরের সোনাইকুণ্ডি গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় স্বজনসহ গ্রামবাসীর কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে গোটা পরিবেশ।

মরদেহের সঙ্গে ঢাকা থেকে মাগুরা আসেন নারী ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা পারভিন, জাতীয় নাগরিক কমিটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, অপর সমন্বয়ক সারজিস আলম।

ফরিদা পারভিন বলেন, ‘একটা মায়ের হাহাকার মানে সারা দেশের মায়ের হাহাকার। মনে রাখবেন, এ ধরনের অপরাধের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনে আইনের সংশোধনের সুপারিশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

এর আগে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘ডিএনএ স্যাম্পল কালেকশন করা হয়ে গেছে, আশা করি আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে যাবো। এরই মধ্যে ১২-১৩ জনের ১৬১ ধারায় (দণ্ডবিধি) স্টেটমেন্ট নেওয়া হয়েছে। আশা করছি আগামী সাত দিনের মধ্যে বিচার কাজ শুরু হবে।